ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন আজকের পোস্টের বিশয়ঃ কোন যানবাহন চালানোর জন্য অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন | ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে অবশ্যই গ্রাহককে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে | লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য নূন্যতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম বয়স হতে হবে ২০ বছর এবং যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কোন ভুল তথ্য ব্যবহার করা হয় তাহলে পরবর্তীতে গ্রাহকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
1. জন্ম সনদের ফটোকপি বা ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)
2. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি (১৫০ কেভি এর মধ্যে হলে ভালো হয়)
3. গ্রাহকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী)
4. ইউটিলিটি বিল এর স্ক্যান কপি / বিদ্যুৎ, পানি বা গ্যাস বিলের কপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)
5. রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা মেডিকেল টেস্টের সার্টিফিকেটের কপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)
( এই সকল কাগজপত্র ব্যবহার করে আবেদন সম্পূর্ণ করার পর আবেদন ফরমে আপনার লিখিত পরীক্ষার তারিখ উল্লেখ থাকবে| মৌখিক,
লিখিত এবং ফিল্ড পরীক্ষায় উন্নীত হওয়ার পর গ্রাহককে স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে )
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইন আবেদন
ঘরে বসেই খুব সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মোবাইল অথবা কম্পিউটার ফোন ব্যবহার করে অনলাইন আবেদন করা যায়| ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনলাইন আবেদনের জন্য গ্রাহককে প্রথমে তার g00gle chrome ব্রাউজারটি ওপেন করে নিতে হবে | তারপর সার্চ অপশনে গিয়ে bsp.brta.gov.bd লিখে সার্চ করতে হবে | এখন আপনার সামনে বিআরটি এর ওয়েবসাইটটি চলে আসবে | উপরের দিকে লেখা আছে নিবন্ধন করুন সেখানে গ্রাহককে নিবন্ধন করে নিতে হবে | তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে গ্রাহকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে |
স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- রেজিস্টার চিকিৎসক কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশী তদন্তের প্রতিবেদন
- নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ
ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি
যেকোনো এক ধরনের হালকা মোটরযান অথবা একটি মাত্র মোটরসাইকেলের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ২৫০ টাকা, দক্ষতা যাচাই পরীক্ষার জন্য গ্রাহককে দিতে হবে ২০০ টাকা এবং এর সাথে রয়েছে ১৫% ভ্যাট অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৫১৮ টাকা | তবে গ্রাহক চাইলে যেকোনো দুই টি হালকা মোটরযানের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করতে পারেন | মোটরসাইকেলের সাথে অন্য কোন হালকা যানবাহন যুক্ত করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে গ্রাহককে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা , দুটি ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষা দিতে হবে এবং ফি প্রদান করতে হবে ২০০ + ২০০ অর্থাৎ ৪০০ টাকা যার সাথে ১৫ পার্সেন্ট ভ্যাট অর্থাৎ গ্রাহককে মোট ৭৪৮ টাকা প্রদান করতে হবে | যদি গ্রাহক লার্নার অর্থাৎ শিক্ষানবিষ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় তাহলে তাকে পুনরায় ২০০ টাকা ফি প্রদান করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে | এবং সাথে ১৫% ভ্যাট দিতে হবে| যদি গ্রাহক ৬ মাসের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে সেক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য ২৫০ টাকা প্রদান করতে হবে |
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ থাকে ১০ বছর এবং ১০ বছরের জন্য লাইসেন্স টি পেতে ৩০০০ টাকা , আবেদনের জন্য লাগবে ৩০০ টাকা এবং স্মার্ট কার্ড ফি ৬১০ টাকা এবং ভ্যাট দিতে হবে ১৫% সাথে পোস্টাল সার্ভিস ফি ৬০ টাকা | অর্থাৎ কোন গ্রাহক যদি অপেশাদার লাইসেন্স করতে চায় সেক্ষেত্রে তার মোট খরচ হবে ৪৫৫৭ টাকা | কোন গ্রাহক যদি পেশাদার লাইসেন্স করতে চায় সেক্ষেত্রে পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ থাকবে পাঁচ বছর এবং পাঁচ বছরের জন্য গ্রাহককে দিতে হবে ১৫০০ টাকা, আবেদন খরচ ৩০০ টাকা, স্মার্ট কার্ড ফ্রি ৬১০ টাকা, পোস্টাল সার্ভিস এবং ভ্যাট সকল সার্ভিস দিয়ে আপনাকে দিতে হবে ২৮৩২ টাকা |
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফি
সাধারণত অপেশাদার অর্থাৎ শিক্ষানবিশ বা লার্নার লাইসেন্সের মেয়াদ থাকে ১০ বছর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর | তারপর ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায় | যদি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায় তখন পুনরায় ড্রাইভিং লাইসেন্সটিকে সচল বা নবায়ন করতে আর কোন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় না | শুধুমাত্র নির্ধারিত ফি প্রদান করেই গ্রাহক তার ড্রাইভিং লাইসেন্স টিকে পুনরায় সচল করে নিতে পারেন | অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের নবায়ন ফি ৪২১২ টাকা এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের নবায়ন ফি ২৪৮৭ টাকা |
যদি কোন গ্রাহকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কয়েক বছর আগে উত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে প্রতিবছরের জন্য গ্রাহককে নির্ধারিত ফি এর সাথে ৫১৮ টাকা বাড়তি দিতে হবে | অর্থাৎ যদি লাইসেন্সটি অপেশাদার হয় তাহলে তাকে প্রতি বছরের জন্য প্রদান করতে হবে ৪২১২ + ৫১৮ টাকা এবং যদি পেশাদার হয় তাহলে প্রদান করতে হবে ২৪৮৭+৫১৮টাকা |
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কত সময় লাগে
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনের পর ২ থেকে ৩ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে | তারপর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে | শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির তিন বছর পর মিডিয়াম ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং মিডিয়াম ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আরো তিন বছর পর ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আবেদন করা যায় |
ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার ফলাফল চেক
গ্রাহক চাইলে খুব সহজেই তার মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার ফলাফল চেক করে নিতে পারে | সে ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটারের যেকোনো একটি ব্রাউজার অন করে নিন | সার্চ বাড়ে bsp.brta.gov.bd লিখে সার্চ করুন | এখন ডি সি টি বি এর ফলাফল অপশনটি সিলেক্ট করুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আপনার রেজাল্ট দেখে নিন|
ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক
গ্রাহক চাইলে ড্রাইভিং লাইসেন্স ঘরে বসেই চেক করে নিতে পারেন | সে ক্ষেত্রে আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে BRTA DL Checker নামক অ্যাপটি আপনার এন্ড্রয়েড ফোনে ইন্সটল করে নিন | ইনস্টল শেষে ওপেন বাটনে ক্লিক করুন | এবার রেফারেন্স নাম্বার বসান আর যদি আপনি আপনার পুরাতন ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার পুরাতন ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বরটি বসান | তারপর আবেদনের সময় ব্যবহৃত জন্ম সালটি বসান এবং সার্চ বাটনে ক্লিক করুন| আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স টি প্রস্তুত হয়ে থাকলে এখানে সম্পূর্ণ ডিটেইলস দেখতে পাবেন |
এসএমএসের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক
মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বড় হাতের অক্ষরে DL স্পেস ড্রাইভিং DRIVING LICENCE NUMBER লিখে ২৬৯৬৯ নম্বরে পাঠিয়ে দিন | কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্ট্যাটাস জানিয়ে দেওয়া হবে |